Laserশব্দের পূর্ণ অর্থ হচ্ছে Light Amplification by Stimulated Emission of Radiation. লেজার প্রিন্টারের মূলনীতি অফিস কপির (Photo Copy) মূলনীতির উপর প্রতিষ্ঠিত। প্রথমে পৃষ্ঠার একটি প্রতিবিম্ব (Image) মেশিনের ফটো পরিবাহী (Photo-Sensitive) ড্রামের উপর তৈরি হয়। পরে পাউডার ইঙ্ক বা “টোনার” (Powder ink or “Toner“) অর্থাৎ গুঁড়ো কালি প্রতিবিম্বের উপর প্রয়োগ করা হয়।
এ অবস্থায় ড্রাম হতে কাগজের পাতায় প্রতিবিম্বটি স্থিতি বৈদ্যুতিক উপায়ে (Electrostatically) স্থানান্তরিত হয়। সর্বশেষে কাগজের উপর কালিযুক্ত প্রতিবিম্বটিকে তাপের মাধ্যমে ফিউজ (Fuse) করা, অর্থাৎ তাপ প্রয়োগ করে যুক্ত) করা হয়।
একটি ঘূর্ণায়মান আয়ন (যার 6 অথবা তার অধিক পার্শ্ব থাকে) লেজার বিমটিকে ফটো-পরিবাহী ড্রাম বরাবর ছুটোছুটি (Sweep) করতে সাহায্য করে। র্যাস্টার স্ক্যান প্রক্রিয়ায় সিআরটি পর্দাতে যেভাবে প্রতিবিম্ব তৈরি করা হয়, ঠিক সেভাবে লেজার বিমটিকে অন/অফ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পিছনে-সামনের (Back and front) দিকে ছুটোছুটি (Sweep) করিয়ে ড্রামের উপর প্রতিবিম্ব তৈরি করা হয়।
ড্রামের উপর উৎপন্নকৃত প্রতিবিম্বটিকে কালিযুক্ত করে কাগজের উপর স্থানান্তরিত করার পর ড্রামটিকে পরবর্তী পৃষ্ঠার জন্যে পরিষ্কার রাখা হয়।
লেজার প্রিন্টারের কার্যনীতি
যে প্রিন্টার লেজার রশ্মি ব্যবহার করে প্রিন্টিং কার্য সম্পন্ন করা হয়, তাকে লেজার প্রিন্টার (LASER Printer) বলে। লেজার প্রিন্টার অনেকটা অফিস কপিয়ার (Office copier) এর মতো। এর মধ্যে ফটোসেনসিটিভ ড্রাম থাকে।
কাগজে যে সমস্ত ক্যারেক্টার প্রিন্ট করতে হবে, তার ইমেজ তৈরি করার জন্য লেজার রশ্মি ব্যবহার করা হয়। তারপর ড্রাম এর ইমেজের উপর চার্জিত কালি অথবা টোনার প্রয়োগ করে ক্যারেক্টার প্রিন্ট করা হয়। এ প্রিন্টার খুবই উন্নত মানের এবং ছাপার মানও খুবই ভালো।

প্রায় সকল লেজার প্রিন্টারই নির্দিষ্ট কয়েকটি ধাপে কার্যক্রম সম্পাদন করে থাকে। ধাপসমূহ হচ্ছে-
১। ক্লিনিং (Cleaning)
২। কন্ডিশনিং (Conditioning)
৩। রাইটিং (Writing)
৪। ডেভেলপিং (Developing)
৫। ট্রান্সফারিং (Transferring)
৬। ফিউজিং (Fusing) ।
উল্লিখিত ধাপসমূহের মাধ্যমে কার্যাবলি সম্পাদনের জন্যে যে সমস্ত হার্ডওয়্যার সামগ্রী ব্যবহৃত হয়ে থাকে, সেগুলো হলো পাওয়ার সাপ্লাই (Power Supply), কন্ট্রোল বোর্ড (Control Board), লেজার রাইটিং ইউনিট (LASER Writing Unit), ড্রাম ইউনিট (Drum Unit), ফিউজিং (Fusing), পেপার ফিড মোটর (Paper Feed Motor), গিয়ার ট্রেইন (Gear Train), সিস্টেম সেন্সর (System Sensor), কন্ট্রোল প্যানেল বোর্ড (Control Panel Board) ইত্যাদি।
উক্ত হার্ডওয়্যারসমূহের সাহায্যে লেজার প্রিন্টারের কার্যাবলি সম্পাদনের ব্লক ডায়াগ্রাম নিম্নরূপ-

লেজার প্রিন্টারের কার্যনীতির বর্ণনা:
লেজার প্রিন্টারেরকার্যনীতি বুঝার জন্য এর ব্লক ডায়াগ্রাম লক্ষ করলে বুঝা যায় যে, এতে একটি লেজার সোর্স, একটি একাধিক সাইডবিশিষ্ট আয়না, ফটোসেনসিটিভ ড্রাম, টোনার ও ‘একটি ক্লিনিং ইউনিট বিদ্যমান।
লেজার প্রিন্টারের কার্যনীতি অনেকটা ফটো কপিয়ারের প্রিন্টিং নীতির মতোই।
এতে একটি লেজার সোর্স বা বর্তমানে অনেক সময় লেজার ডায়োড ব্যবহার করেও লেজার রশ্মি উৎপন্ন করা হয়। উৎপন্নকৃত এই লেজার বিমকে একাধিক সাইড বিশিষ্ট (কমপক্ষে ৬টি সাইড আছে এমন) একটি ঘূর্ণায়মান আয়নার মাধ্যমে ফটোসেনসিটিভ ড্রাম বরাবর র্যাস্টার স্ক্যান প্রক্রিয়ায় সিআরটি পর্দাতে যেভাবে প্রতিবিম্ব তৈরি করা হয়, ঠিক সেভাবে লেজার বিমটিকে অন-অফ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পিছনে- সামনের (Back and Front) দিকে ছুটোছুটি করানো হয়।
এ লেজার বিমটিকে এমনভাবে অন-অফ করানো হয় যাতে যে লেখা বা ছবি প্রিন্ট করতে হবে তার সাপেক্ষেই ফটোসেনসিটিভ ড্রামের উপর লেজার রশ্মির প্রতিবিম্ব তৈরি হয়। এরপর ফটোসেনসিটিভ ড্রামের প্রতিবিম্বের উপর চুম্বকীয় পদার্থের গুঁড়ো কালি বা টোনার প্রয়োগ করা হয়। ফলে ড্রামের উপর চার্জযুক্ত স্থানে বা প্রতিবিম্বযুক্ত স্থানে এ কালি জমা হয় আর চার্জবিহীন স্থানে কোনো কালি থাকে না।
অতঃপর সর্বদা দ্রুতগতিতে ঘূর্ণায়মান ড্রামের উপর দিয়ে সাদা কাগজকে চালনা করলে সাদা কাগজের উপর ড্রামের মতোই অনুরূপ কালির একটি প্রতিবিম্ব তৈরি হয়। পরবর্তীতে কাগজের উপর কালিযুক্ত এ প্রতিবিম্বটিকে ফিক্সিং রোলারের মাধ্যমে তাপ প্রয়োগ করে কাগজে স্থায়ী রূপ দেয়া হয়। এভাবেই লেজার প্রিন্টারের মাধ্যমে প্রিন্টিং কার্য সম্পন্ন হয়।
লেজার প্রিন্টারের প্রধান অংশ ও উপাদানসমূহ
একটি লেজার প্রিন্টার হচ্ছে মেকানিক্যাল ও ইলেকট্রনিক কম্পোনেন্টস-এর কম্বিনেশন (Combination)। লেজার প্রিন্টারে ছয়টি প্রধান কম্পোনেন্ট ছাড়াও অন্যান্য আরো বিভিন্ন কম্পোনেন্ট আছে। ছয়টি প্রধান কম্পোনেন্ট হচ্ছে-
১। ইমেজ প্রসেসর (Image Processor)
২। চার্জড রোলার বা চার্জড করোনা ওয়্যার (Charged Roller or Charged Corona Wire)
৩। ফটোসেনসিটিভ ড্রাম (Photosensitive Drum)
৪। নেগেটিভ চার্জযুক্ত টোনার (Negatively Charged Toner)
৫। ফিউজার অ্যাসেমব্লি (Fuser Assembly) ও
৬। লেজার অ্যাসেমব্লি (LASER Assembly)।
এ ছাড়া অন্যান্য অংশগুলো হচ্ছে-
৭। পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট (Power Supply Unit)
৮। কন্ট্রোল বোর্ড (Control Board)
৯। পেপার ফিড মোটর (Paper Feed Motor)
১০। পেপার ফিড রোলার (Paper Feed Roller)
১১। সিস্টেম সেন্সর (System Sensor)
১২। কন্ট্রোল প্যানেল বোর্ড (Control Panel Board), ইত্যাদি।
লেজার প্রিন্টারের প্রতিটি অংশ ও উপাদানের কাজ
লেজার প্রিন্টার একটি উচ্চ-গতিসম্পন্ন প্রিন্টার, যা লেজার প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রিন্ট করতে ব্যবহৃত হয়। এটির প্রতিটি অংশ যা উপাদানের নিম্নলিখিত কাজগুলো রয়েছে-
- লেজার: লেজার প্রিন্টারের মৌলিক উপাদান হলো লেজার বা সংকেতকারী প্রক্রিয়ায়। এটি বিশেষভাবে গোলকীয় আলো ব্যবহার করে প্রিন্টিং সারিকে তৈরি করে, যা প্রিন্ট করার পৃষ্ঠার উপর চিত্রিত হয়।
- ড্রাম ইউনিট: এটি লেজার প্রিন্টারের মাধ্যমে প্রিন্টিং সারিকে ধারণ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। ড্রাম ইউনিটে রয়েছে একটি স্টেটিক চার্জ ডিজিটাল ড্রাম, যা কাগজে বা অন্য প্রিন্টিং মাধ্যমে বসিয়ে প্রিন্টিং সারি তৈরি করে।
- ডেভেলপিং ইউনিট: এটি লেজার প্রিন্টারের মাধ্যমে প্রিন্টিং সারিকে বৃদ্ধি দেয়। ডেভেলপিং ইউনিটে থাকে একটি ডেভেলপার বা রঙের চোখের মতো পদার্থ, যা লেজার থেকে তৈরি করা বিন্দুগুলোর উপর বসিয়ে প্রিন্টিং সারি বা চিত্র উজ্জ্বল করে।
- টোনার কার্তুজ: এটি লেজার প্রিন্টারের মাধ্যমে রঙিন পদার্থ সরবরাহ করে, যা প্রিন্টিং সারিতে সেট করা হয়। টোনার কার্তুজ রক্তি পাউডার বা স্যারিল মিশ্রণ ধারণ করে, যা প্রিন্টিং সারিতে বসিয়ে তারপর রঙিন প্রিন্টিং সারি তৈরি করে।
- ফিউজিং ইউনিট: এটি লেজার প্রিন্টারের মাধ্যমে প্রিন্টিং সারিকে দ্রুত সংঘটিত করার মাধ্যমে স্থিতিশীল করে। ফিউজিং ইউনিটে আছে একটি ফিউজিং রোল, যা তাপ প্রদান করে। এগুলো হলো কয়েকটি প্রধান অংশ ও উপাদান, যা একটি লেজার প্রিন্টারে ব্যবহৃত হয় এবং প্রিন্টিং প্রক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি অংশ ব্যবহার করে লেজার প্রিন্টার প্রিন্টিং সারিকে সুস্থ, স্থিতিশীল এবং উজ্জ্বল করে।
প্যারালাল ইন্টারফেস এর মাধ্যমে ডাটা বিনিময়

সমান্তরাল ইন্টারফেস ডাটা বিনিময়ের একটি প্রধান ধাপ হিসাবে ব্যবহৃত হয় এবং এটি নেটওয়ার্ক সংযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সমান্তরাল ইন্টারফেস ব্যবহার করে একই সময়ে একাধিক বিভিন্ন বিনিময় লাইন চালানো যায়। নিম্নলিখিত ধাপগুলো সমান্তরাল ইন্টারফেস ব্যবহার করে ডাটা বিনিময় সম্পন্ন করে-
ডাটা সিরিয়ালাইজ করা: প্রথমে ডাটা সিরিয়ালাইজ করা হয়, যা একটি বাইনারি ফরম্যাটে ডাটা কম্প্রেস করে রাখে। এটি নেটওয়ার্কে পাঠানোর সময় ডাটা ট্রান্সমিশনের পারপাটি কমায় এবং অনেকগুলো পার্টে ভাগ করে পাঠায়।
ট্রান্সমিশন প্রারম্ভ:সমান্তরাল ইন্টারফেসে প্রথমে ট্রান্সমিশন প্রারম্ভ হয়। এতে নেটওয়ার্কের প্রতিটি সংযোগের জন্য একটি সংযোগকারী লাইন থাকে এবং প্রতিটি লাইনে সমান তারকা বা সংখ্যার নাম্বার থাকে।
ডাটা পাঠানো: প্রতিটি লাইন থেকে সিরিয়ালাইজ করা ডাটা পাঠানো হয়, যা আগেই সিরিয়ালাইজ করা হয়েছে। প্রতিটি লাইন তারকা বা নাম্বার ব্যবহার করে আলাদা করা হয়, যাতে প্রাপ্ত ডাটা সঠিক সংযোগে পাঠানো যায়।
ডাটা প্রাপ্তি: প্রতিটি লাইন সমান্তরাল ইন্টারফেস থেকে ডাটা প্রাপ্ত হয়। প্রাপ্ত ডাটা প্রক্রিয়ায় যাওয়ার আগে এটি ডিসিরিয়ালাইজ করা হয়, যাতে আগাম উপস্থিত করতে পারে।
ডাটা ডিসিরিয়ালাইজ করা: প্রাপ্ত ডাটা ডিসিরিয়ালাইজ করা হয়, যা আগামে সিরিয়ালাইজ করা ডাটার আকারে ফিরে যায়। ডিসিরিয়ালাইজড ডাটা সমস্ত ডাটা পরিচালনা করতে ব্যবহৃত হয়।
ডাটা প্রক্রিয়া: ডিসিরিয়ালাইজড ডাটা প্রক্রিয়া করা হয় এবং প্রয়োজন অনুযায়ী কাজ করার জন্য সেট করা হয়। প্রক্রিয়ায় ডাটা ব্যবহার করা হয় এবং পরবর্তী ধাপে পাঠানো হয়।
ডাটা প্রেরণ: প্রক্রিয়ায় পাঠানো ডাটা একটি বাইনারি ফরম্যাটে সিরিয়ালাইজ করে রাখা হয় এবং নেটওয়ার্কের সংযোগের মাধ্যমে পাঠানো হয়। সমান্তরাল ইন্টারফেসে প্রতিটি লাইন থেকে ডাটা প্রেরণ করা হয় এবং প্রেরণ করা ডাটা সংগঠিত করার জন্য পুনরায় সিরিয়ালাইজ করা হয়।

এটি মোটামুটি সমান্তরাল ইন্টারফেস ব্যবহার করে ডাটা বিনিময়ের প্রক্রিয়াটি বর্ণনা করে। প্রতিটি লাইন সমান প্রয়োগের ধাপগুলো নিয়ে একটি সংক্ষেপসার বিবরণ প্রদান করে, যা ডাটা বিনিময়ে ব্যবহৃত হয়।